পবিত্র কোরানেও বলা হয়েছে “ইসরাইল দেশ” ইহুদিদের

আমি আমার অনেক প্রবন্ধে বলেছি, ইহুদিদের “আল্লাহ” যাকে তারা “যিহোভা” বলে, তিনি তাদের বেহেস্তি খাবার ও বসবাসের জন্য প্রাক্তন “কিনান” তথা বর্তমান “ইসরাইল” দান করেছেন। দানসূত্রে প্রাপ্ত এ ভূমিকে ইহুদিরা বলে যিহোভা প্রদত্ত “প্রতিশ্রুত ভূমি”! কিন্তু তাওরাতে বর্ণিত এসব কথা মুসলমানরা প্রত্যাখ্যান করলেও, খোদ পবিত্র কোরানেই বলা আছে এ ভূমি বনি ইসরাইলি তথা ইহুদিদের! দেখা যাক কোরানিক সূত্রসমুহ প্রমাণসহ –

সুরা বনী-ইসরাঈল, আয়াত-১০৪
وَقُلْنَا مِن بَعْدِهِ لِبَنِي إِسْرَائِيلَ اسْكُنُواْ الأَرْضَ فَإِذَا جَاء وَعْدُ الآخِرَةِ جِئْنَا بِكُمْ لَفِيفًا
তারপর আমি বনী ইসরাইলকে বললামঃ “এ দেশে তোমরা বসবাস কর”। অতঃপর যখন পরকালের ওয়াদা বাস্তবায়িত হবে, তখন তোমাদের কে জড়ো করে নিয়ে উপস্থিত হব।
এখানে “এ দেশ” মানে পুরাতন কিনান তথা বর্তমান ইসরাইল”!
:
সুরা আল মায়েদা, আয়াত-২০
وَإِذْ قَالَ مُوسَى لِقَوْمِهِ يَا قَوْمِ اذْكُرُواْ نِعْمَةَ اللّهِ عَلَيْكُمْ إِذْ جَعَلَ فِيكُمْ أَنبِيَاء وَجَعَلَكُم مُّلُوكًا وَآتَاكُم مَّا لَمْ يُؤْتِ أَحَدًا مِّن الْعَالَمِينَ
যখন মূসা স্বীয় সম্প্রদায়কে বললেনঃ হে আমার সম্প্রদায়, তোমাদের প্রতি আল্লাহর নেয়ামত স্মরণ কর, যখন তিনি তোমাদের মধ্যে পয়গম্বর সৃষ্টি করেছেন, “তোমাদেরকে রাজ্যাধিপতি করেছেন” এবং তোমাদেরকে এমন জিনিস দিয়েছেন, যা বিশ্বজগতের কাউকে দেননি।
এখানে “তোমাদেরকে রাজ্যাধিপতি করেছেন” মানে সেই “ইসরাইল” দেশের রাজ্যাধিপতির কথা বলা হয়েছে!
:
সুরা আল মায়েদা, আয়াত-২১
يَا قَوْمِ ادْخُلُوا الأَرْضَ المُقَدَّسَةَ الَّتِي كَتَبَ اللّهُ لَكُمْ وَلاَ تَرْتَدُّوا عَلَى أَدْبَارِكُمْ فَتَنقَلِبُوا خَاسِرِينَ
হে আমার সম্প্রদায়, “পবিত্র ভুমিতে প্রবেশ কর, যা আল্লাহ তোমাদের জন্যে নির্ধারিত করে দিয়েছেন” এবং পেছন দিকে প্রত্যাবর্তন করোনা। অন্যথায় তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে।
এখানে “পবিত্র ভুমিতে প্রবেশ কর, যা আল্লাহ তোমাদের জন্যে নির্ধারিত করে দিয়েছেন” বলতে “ইসরাইল ভূমিকেই বোঝানো হয়েছে।
:
কোরানিক উক্ত প্রমাণ ছাড়াও- (১) প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছর এ ভূমিতে ইহুদিরা বসবাস করতো, তাই এ ভূমির প্রকৃত দাবীদার ইহুদিরা। (২) ১৯৪৮ সনের জাতিসংঘ সনদ অনুসারে এ ভূমির দাবীদার ইহুদিরা (৩) অধিকৃত ভূমি ১২-বছরের বেশী ইসরাইলের দখলে থাকার কারণে “তামাদি আইনেও” এ ভূমির দখলদার হিসেবে মালিক ইহুদিরা। (৪) “যুদ্ধে জোর করে দখল করতে পারলে সে দেশ তার” এ স্বৈরাচারী নীতিতেও ইসরাইল তাদের হারানো দেশ জোর করে দখল করেছে মেনে নিলেও, এ দেশের মালিক তারা। যেমন বৃটেন আর্জেন্টিনিয়ার “ফকল্যান্ড” দ্বীপ জোর করে দখল করে, মালিক হয়ে বসে আছে। এবং (৫) কোরানের ১১৪-টি সুরার কোনটিতেই বলা হয়নি, কিনান তথা ইসরাইল দেশে ইহুদিরা বসবাস করতে পারবেনা। সে দেশটা মুসলমানদের। কেবল হাদিসে নবী (স) বলেছেন, “জাজিরাতুল আরব থেকে ইহুদি-নাসারাদের বহিস্কার করো”। জাজিরাতুল আরব মানে “আরব উপদ্বীপ”, ইসরাইল নয়।
:
সুতরাং আবার কৃপা করে বলি, হে মুসলমান ভাইগণ – রক্তারক্তি, যুদ্ধ, হত্যা বন্ধে আজই শান্তি চুক্তি করুন। ২০% মুসলমান নিয়ে ইহুদিরা ইসরাইলে শান্তিতে বসবাস করুক। ফিলিস্তিনিসহ সকল মুসলমানরা তাদের দেশে শান্তিতে বসবাস করুক। যুদ্ধ করে এ বিষয়ের কোন ফায়সালা হবেনা! কেবল নীরিহ ফিলিস্তিনি ভাইবোন, নারী-শিশু মৃত্যুবরণ করবে!

You may also like...