১৯৬৭ সালের,১লা মে’র শ্রমমন্ত্রীর যে ভাষন শুনতে দেওয়া হয়নি (ভাষন: – কমরেড সুবোধ ব্যানার্জী)

করোনার মহামারির পরিস্থিতিতে এবছর ১লা মে পালিত হল এক কঠিন সময়ে। একদিকে NRC,NPR এনে যখন এদেশে স্বস্তার শ্রমিক বানানোর চেষ্টা চলছিল তখন মহামারি এসে যাওয়ায় দেশের কোটি কোটি শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছে। পরিযায়ী শ্রমিকরা ঘরে ফিরতে পারছে না।সরকার ও তাদের স্বার্থে উপযুক্ত ব্যাবস্থা গ্রহন করছে না। বহু শ্রমিক অনাহারে মরছে।এমত অবস্থায় সরকার হুঁশিয়ারি দিয়ে ফর্মান জারি করেছে লকডাউন উঠলে ১২ ঘন্টা শ্রমের।যা শ্রম স্বার্থ বিরোধী পদক্ষেপ। শুধু এই না চরম দূর্ভোগে শ্রমিকদের ফেলে পর্যাপ্ত রেশন ও স্বাস্থ্য পরিবেশে বা কর্মহীন শ্রমিকদের দিতে ব্যার্থ হচ্ছে সরকার।দাবী জানানো সত্বেও উপযুক্ত পদক্ষেপ নেই। সমরাস্ত্র কিনতে তারা ব্যাস্ত এমন কঠিন পরিস্থিতিতেও।লকডাউন উঠলেই বিশ্ব আর্থিক মন্দার প্রকপে বহু মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়বে।নতুন রিক্রুটমেন্ট ও অনির্দিষ্টকালের জন্যে বন্ধ থাকবে। সারা দেশ জুড়ে করোনার থেকেও বড় মহামারি নিচ্ছে খাদ্যাভাব‌।

 

বহু মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে এসে নানা সংগঠন বা ব্যাক্তিগত উদ্যোগে নিরন্ন মানুষদের জন্যেই ত্রান দিচ্ছেন। কিন্তু এটা আর সারা দেশের নিরিখে কতটুকু? সরকার যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে খাদ্যাভাবেই মারা যাবে এদেশের অগনিত মানুষ। অথচ তারা জনগনের স্বার্থ নিয়ে ভাবতে এতটুকুও নারাজ। উল্টে কর্পোরেট সেবায় তারা নিয়োজিত।এই অবস্থায় শ্রমিকদের লড়াই আন্দোলন ই পারে অধিকার অর্জনের রাস্তা প্রশস্ত করতে। এ সময় তাই কমরেড সুবোধ ব্যানার্জী র ঐতিহাসিক ভাষন তুলে দিলাম। একটা রাজ্য সরকার ১৯৬৭ সালে সর্বোতভাবে শ্রমিক স্বার্থ রক্ষায় বদ্ধ পরিকর হতে পেরেছিল। যা আজ এদেশের বুর্জোয়া শ্রেনী তাদের নিজেদের স্বার্থে জনগনকে বিভ্রান্ত করে ভ্রান্ত পদক্ষেপ গ্রহন প্রয়োজনীয় বলে বেখ্যা করার অনৈতিক কাজ করছে শুধুমাত্র মহামারির অযুহাতে লকডাউনে ক্ষতির অযুহাতে। এ মত অবস্থায় যুক্তফ্রন্টের শ্রমনীতি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। যুক্তফ্রন্ট পেরেছে বর্তমান সরকারগুলো পারছে না কেন? কারন যুক্ত ফ্রন্ট কর্পোরেট সেবায় নিয়োজিত ছিলো না শ্রমিক স্বার্থ রক্ষার হাতিয়ার ছিলো।শ্রমিক স্বার্থে লড়াই শক্তিশালী করতে ১লা মে’র কমরেড সুবোধ ব্যানার্জীর ভাষনটা তুলে দিলাম আন্তর্জাতিক শ্রম দিবসে।

 

১৯৬৭ সালের ১ লা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে পশ্চিমবাংলার যুক্তফ্রন্ট সরকারের শ্রমমন্ত্রী জননেতা ও শ্রমিক আন্দোলনের স্তম্ভ কমরেড সুবোধ ব্যানার্জীর নিম্নলিখিত ভাষনটি ‘অল ইন্ডিয়া রেডিও’র (আকাশবাণী) কলকাতা কেন্দ্র থেকে প্রচার করার কথা ছিল।কিন্তু বেতার কর্তৃপক্ষ চালু নিয়মের কথা তুলে তাঁর ভাষনের কিছু অংশ সংশোধন করার দাবী জানায়।কমরেড সুবোধ ব্যানার্জী এতে আপত্তি জানান ও ভাষনটি দিতে অস্বীকার করেন।বেতার কর্তৃপক্ষের আপত্তির কারণ হিসাবে সেদিন সংবাদপত্রে যতটুকু প্রকাশিত হয়েছিল তা হচ্ছে –ঐ ভাষণে (১) ২০ বছরের কংগ্রেসী শাসন এবং বিশেষ করে কংগ্রেস দলের সমালোচনা করা হয়েছে‌।(২) ঐ বক্তৃতাতে ভারতীয় সংবিধান সম্পর্কে প্রশ্ন তোলা হয়েছে এবং (৩) শ্রমমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বিপ্লবের আহ্বান জানিয়েছেন।

 

            পশ্চিমবঙ্গের শ্রমমন্ত্রী র মে দিবসের বেতার ভাষন প্রত্যাহারকে কেন্দ্র করে সারাদেশব্যাপী সেদিন বিরাট বিতর্ক ও আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল।সে বিতর্ক সম্পর্কে একটি সুনির্দিষ্ট পথে পরিচালনার জন্য যুক্তফ্রন্ট সরকার এক বলিষ্ঠ সিদ্ধান্ত সেদিন ঘোষনা করেছিলেন।একজন মন্ত্রীর ভাষন বা বক্তব্যের উপর আকাশবাণীর কোন ও আমলার কলম চালাবার অধিকার থাকবে কি না—এ প্রশ্নের ফায়সালা না হওয়া পর্যন্ত যুক্তফ্রন্ট সরকারের কোন ও মন্ত্রী বেতারে ভাষন দেবেন না–সরকার এই সিদ্ধান্ত সেদিন ঘোষনা করেছিলেন।

 

             আকাশবাণী কর্তৃপক্ষের আপত্তির তিনটি পয়েন্টেরই যোগ্য জবাব সেদিন যুক্তফ্রন্ট সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছিল।

 

        জবাবে প্রত্যক্ষ উদাহরণ দিয়ে বলা হয়েছিল–কংগ্রেস পরিচালিত তদানীন্তন রাজ্য সরকারের মুখ্যমন্ত্রী কিছুদিন যাবৎ আকাশবাণীতে বামপন্থী দলগুলোর বিরুদ্ধে অশ্রাব্য ,অশোভন বক্তব্য দিনের পর দিন যখন রেখেছেন তখন আকাশবাণী কোন প্রতিবাদ করেনি।অথচ দেশের শ্রমিক শ্রেনীর  জীবনের জ্বলন্ত আর্থ-সামাজিক সমস্যাকে যখন তোলা হয়েছে তখন তারা এসব যুক্তি অবতারণা করে কার্যতঃ ভাষনটির প্রচারে বাধা সৃষ্টি করেছেন। দ্বিতীয়ত, সংবিধানের সীমাবদ্ধতার কথা আলোচনা করা এবং সে বিষয়ে জনগনকে সচেতন করা সর্বদাই গনতন্ত্র সম্মত।এ পথেই পার্লামেন্টারি গনতন্ত্রের  সম্প্রসারণ ঘটে থাকে‌। তৃতীয়তঃ গনতন্ত্রের অন্যতম স্বকীয় মতামত প্রকাশের পূর্ণ অধিকার একজন নাগরিক অবশ্যই ভোগ করবেন। এক্ষেত্রে কন্ঠরোধ করা গনতন্ত্র বিরোধী।মতামতের সত্যতা বিচার করার দায়িত্ব,অধিকার,কর্তব্য জনগণের রয়েছে। এক্ষেত্রে কন্ঠরোধ করা গনতন্ত্র বিরোধী ।মতামতের সত্যতা বিচার করার দায়িত্ব ,অধিকার ,কর্তব্য জনগনের রয়েছে।এক্ষেত্রে হস্তাক্ষেপ গনতন্ত্র বিরোধী কাজ‌।সেদিন আকাশবাণীর এহেন কাজের বিরুদ্ধে রাজ্যের শ্রমজীবী সহ সাধারণ মানুষ প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছিলেন।

 

              উল্লেখযোগ্য যে,মন্ত্রীসভায় আকাশবাণী কর্তৃপক্ষের উক্ত কার্যাবলীর তীব্র নিন্দা করা হয় এবং ভাষনটি প্রত্যাহার করাকে সর্বসম্মত সমর্থন জ্ঞাপন করা হয়।১৯৬৭ সালের ১ লা মে যুক্তফ্রন্টের আহ্বানে কলকাতা ময়দানে (বর্তমানে শহীদ মিনার ময়দানে) যে বিপুল শ্রমিক সমাবেশ ঘটে সেখানে শ্রমমন্ত্রী সুবোধ ব্যানার্জী ঐ ভাষনটি পাঠ করেন এবং সভায় তা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে বিপুল করতালিতে সমর্থিত হয়।বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হয় , পশ্চিমবঙ্গের ত বটেই এমনকি ভারতবর্ষে ও সর্বপ্রথম ১‌লা মে –কে ১৯৬৭ সাল থেকে শ্রমিক দিবস হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে ছুটি ঘোষণা করা হয়।)

(উপরের ছবিতে ট্রেড ইউনিয়নের সভায় ভাষনরত কমরেড সুবোধ ব্যানার্জী ও পাশে দাঁড়িয়ে আছেন কমরেড শংকর সিং।বসে আছেন কমরেড প্রতীশ চন্দ সহ অন্যান্য নেতৃত্ব বৃন্দ)

 

“আজ ১লা মে–মে দিবস ।বিশ্ব শ্রমজীবী মানুষের কাছে এ দিনটির তাৎপর্য গভীর।১৮৮৬ সালে আমেরিকার ‘হে মার্কেটে’ যে শ্রমিকরা দৈনিক কাজের ঘন্টা কমাবার জন্য এই দিনে সংগ্রাম শুরু করেছিলেন তাঁদের সেই জয়যাত্রা আজ ও অব্যাহত গতিতে এগিয়ে চলছে।এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক শ্রমিকশ্রেনীর কাছে সংহতি,ভাতৃত্ব ও সমস্ত রকম শোষনমূলক অবস্থার উচ্ছেদের শপথ গ্রহণ করার দিন।এই পবিত্র দিনে আমি আমার দেশবাসীকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।

           আমি কোনওরকমেই ভুলতে পারিনা যে, পশ্চিমবাংলার সাধারণ মানুষ বিশেষ করে, শ্রমজীবী মানুষ বিশ বছরের কংগ্রেসী শাসনকে দূর করে এ রাজ্যে যুক্তফ্রন্ট সরকার গঠন করেছেন। জনসাধারণের যুক্তফ্রন্ট সরকারের কাছে দাবী অনেক, তাঁদের আশা আকাঙ্খা ও অনেক–এটা খুব স্বাভাবিক।কারণ, স্বাধীনতার বিশ বছর পরে এই প্রথম পরিবর্তন এল এই রাজ্যের প্রশাসন ব্যাপারে।

 

            তবে,তাঁদের কাছে আমি সবিনয়ে কয়েকটি কথা নিবেদন করতে চাই।আমাদের দেশের গনতান্ত্রিক মানুষ ভালভাবেই জানেন যে,আমরা যে সমাজব্যবস্থায় বাস করছি তা পুঁজিবাদী সমাজ ব্যাবস্থা। পুঁজিবাদী সমাজ ব্যাবস্থার ভিত হলো শ্রমজীবী মানুষকে শোষণ।আর এই শোষণ যতদিন থাকবে শ্রমজীবী মানুষের প্রকৃত মুক্তি ততদিন মিলতে পারে না,তাঁদের মৌলিক সমস্যাগুলির স্থায়ী সমাধান ও হতে পারে না।মুক্তি পেতে হলে ,জনসাধারণের মৌলিক সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে হলে, অব্যাহত সমাজ প্রগতির দ্বার খুলে দিতে হলে,পুঁজিবাদী সমাজ ব্যাবস্থাকে পাল্টিয়ে শোষণহীন সমাজতান্ত্রিক সমাজ ব্যাবস্থা গড়তে হবে।তার জন্য প্রয়োজন বিপ্লবের। নির্বাচন বিপ্লব নয়–অথচ আমরা নির্বাচনের মাধ্যমেই সরকার গঠন করেছি। দ্বিতীয়ত শোষণ ব্যাবস্থা থেকে মুক্ত হতে গেলে রাষ্ট্র ব্যাবস্থার পরিবর্তন চাই।সরকারের পরিবর্তনের অর্থ রাষ্ট্রের পরিবর্তন নয়। সুতরাং মনে রাখতে হবে ,আমাদের যুক্তফ্রন্ট সরকার যে অবস্থার মধ্যে কাজ করছে তা পুঁজিবাদী সমাজ ব্যাবস্থার মধ্যেই।এই হলো আমাদের প্রথম এবং মৌলিক সীমাবদ্ধতা।তৃতীয়ত,তাছাড়া ও সংবিধানে রাজ্যগুলির ক্ষমতা খুবই সীমাবদ্ধ।ফলে,যুক্তফ্রন্ট সরকারকে সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও কাজ করতে হচ্ছে।এই দুই সীমাবদ্ধতার মধ্যেই আমাদের যুক্তফ্রন্ট সরকারকে কাজ করতে হবে।যার জন্য গনজীবনে মৌলিক পরিবর্তন সম্ভবপর নয়।

 

      তাহলে, প্রশ্ন হতে পারে আমরা এ সরকারে গেলাম কেন? প্রথমত বোঝা দরকার ,এই দুই সীমাবদ্ধতা সত্বেও বর্তমান অবস্থাতেও এমন কিছু সংষ্কার আনা যেতে পারে যাতে গনজীবনে কিছু সুখ–সুবিধা আসতে পারে। দ্বিতীয়ত এই সংষ্কারের মাধ্যমে দেশের শোষিত সাধারণ মানুষের শোষনমুক্তির আন্দোলনকে সহায়তা করা সম্ভব।আমি মনে করি ,’এই দৃষ্টিভঙ্গিতেই রাজ্য শাসন করা দরকার। শ্রমমন্ত্রী হিসাবে আমি বলতে পারি, যুক্তফ্রন্ট সরকারের শ্রমনীতির উদ্দেশ্য একদিকে যেমন বর্তমান সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ব্যাবস্থার মধ্যে সম্ভবপর সমস্ত রকম প্রগতিশীল আইন আনা,অন্যদিকে যাতে শ্রমিকদের ন্যায়সঙ্গত গনতান্ত্রিক ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন অগ্রগতি লাভ করতে পারে সেদিকে ও দৃষ্টি দেওয়া।এই দুই দিকে লক্ষ্য রেখে নিম্নতম মজুরী বাড়াবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে;যাতে করে আমাদের দেশের ঠিকাদারী মজুরী প্রথা ও ক্যাজুয়াল মজুরী প্রথা স্থায়ী প্রকৃতির শিল্পগুলিতে অবলুপ্ত করা যায় তার জন্য উপযুক্ত আইন করা হচ্ছে;শ্রমিকদের বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়ন গত দাবী দাওয়া কে স্বীকৃতি দিয়ে এদেশের বিভিন্ন শ্রম আইনকে সংশোধনের চেষ্টা করা হচ্ছে।রাজ্য বীমা পরিকল্পনাকে শ্রমিকের স্বার্থে নতুন করে ঢেলে সাজিয়ে প্রকৃত শ্রমিক স্বার্থ রক্ষাকারী ব্যাবস্থা হিসাবে রূপায়িত করা হচ্ছে। এ হল একদিকে, অন্যদিকে যাতে ন্যায়সঙ্গত ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন বাধাবন্ধহীনভাবে গড়ে উঠতে পারে তার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে‌। পুলিশকে এই মর্মে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে,তারা ন্যায়সঙ্গত গনতান্ত্রিক ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনকে নিয়ম ও শৃঙ্খলা রক্ষার অজুহাতে দমন না করে।পুলিশ যে শুধু এইসব আন্দোলনকে দমন করবে না তাই নয়,পক্ষান্তরে মালিক ও সমাজ বিরোধী শক্তির অন্যায় আক্রমণ হতে এই সব আন্দোলন গুলিকে রক্ষাও তারা করবে। ন্যায়সঙ্গত কথাটার অর্থ কি তা বোঝা দরকার।এথিকস অর্থাৎ ন্যায়নীতির ছাত্র মাত্র ই জানেন যে, ন্যায়সঙ্গত হতে হলে সবসময়েই যে তাকে প্রচলিত আইনসঙ্গত হতে হবে এমন কোন কথা নেই।শোষনমূলক সমাজ ব্যাবস্থায় এমন বহু আইনসঙ্গত জিনিস থাকে যাকে ন্যায়সঙ্গত বলা চলে না।যেমন,শ্রমিক ছাঁটাই করার অধিকার বর্তমান সমাজে মালিকের আছে।এই আইনকে আইনসঙ্গত বলে স্বীকার করলেও ন্যায়সঙ্গত বলে স্বীকার করতে সৎ মানুষের আপত্তি থাকতে পারে।সেইরকম যা বে-আইনী তাই ন্যায়সঙ্গত নয় এমন কথাও বলা যায় না‌। সুতরাং শ্রমিক মালিক সম্পর্ককে এই নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে বিচার করার দরকার আজ দেখা দিয়েছে‌‌।আমাদের সমাজে আজ সবচেয়ে যা দরকার তা হলো নতুন দৃষ্টিভঙ্গি,নতুন দৃষ্টিকোণ,যাতে করে আমাদের দেশের মেহনতি মানুষ প্রকৃত সামাজিক বিচার পায়।

 

             এই যে পরিবর্তন —- এটা এমন কিছু খুব বড় পরিবর্তন নয় নিঃসন্দেহে,তবুও এর গুরুত্ব কম নয়।আমাদের দেশের শ্রমিক –কর্মচারীরা এটা যেন বোঝেন।মুক্তি আন্দোলনকে জোরদার করার ক্ষেত্রে, দেশে কংগ্রেসী শাসন প্রশাসন যন্ত্রে যে দুষ্ট চক্রের সৃষ্টি হয়েছিল তাকে দূর করার ক্ষেত্রে প্রশাসন যন্ত্র  প্রশাসন যন্ত্র  এমনকি বিচার বিভাগ দীর্ঘ কংগ্রেসী শসনে যে নীরপেক্ষতা হরিয়েছিল তাকে পুনঃ প্রতিষ্ঠিত করার স্বার্থে কংগ্রেসের পরাজয় প্রয়োজন ছিল।সেদিক থেকে যুক্তফ্রন্ট সরকারের প্রতিষ্ঠা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।একথা স্মরণ রেখে শ্রমিক কর্মচারী ভাইদের আমি অনুরোধ করবো,তাঁরা সর্বপ্রযত্নে নিজেদের সংগঠিত করুন;সঙ্গত গনতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে তুলুন;সমস্ত এডভেঞ্চারিস্ট হঠকারী কাজ থেকে নিজেদের দূরে রাখুন;যুক্তফ্রন্ট সরকারের প্রগতিশীল শ্রমনীতি তথা অন্যান্য নীতির স্বপক্ষে সমর্থন গড়ে তুলুন;সমস্ত রকম প্রতিক্রিয়ার শক্তির আক্রমণ থেকে যুক্তফ্রন্ট সরকারকে সংঘবদ্ধতার জোরে রক্ষা করুন এবং যুক্তফ্রন্ট সরকার যাতে সঠিক কল্যাণকর পথে চলে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রেখে আন্দোলন পরিচালনা করুন।এ কাজ আমরা যদি করতে পারি তাহলে দেশের প্রশাসন কার্যপরিচালনার দৃষ্টিতে একটি গুনগত পার্থক্য আনা যাবে,দেশের সাধারণ মানুষ প্রশাসন কার্যে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহন করতে পারবেন এবং তাঁরা স্বাধীনতার প্রকৃত আস্বাদ দৈনন্দিন জীবনে ভোগ করতে পারবেন।এই লক্ষ্যে পৌঁছাবার জন্যে জনসাধারণকে পবিত্র মে দিবসে আমি সংঘবদ্ধ হবার এবং সমাজপ্রগতির সহায়ক গনতান্ত্রিক আন্দোলনের জোয়ার গড়ে তোলার আহ্বান দিচ্ছি‌। *ইনক্লাব জিন্দাবাদ*”

ধন্যবাদ

You may also like...