নিজেকে খুশি রাখার পথ কিভাবে খুঁজে বের করবেন?

নিজের জন্য কিছুটা সময় ব্যয় করে। দিনের ২৪ ঘণ্টা আপনি হয়ত আপনার কর্মজীবন, অথবা ছাত্রজীবন, এবং তারপর আপনার পারিবারিক জীবনে অতিবাহিত করেন।

সকালে উঠে পড়তে বসা, অথবা তৈরী হয়ে তারপর স্কুল বা অফিসে চলে যান। গৃহবধূ হলে সারাটা দিন নিত্য-নৈমিত্তিক কাজে গোটা দিনটা কাটিয়ে, তারপর সন্ধ্যেবেলায় বাড়ি ফিরে ফের পড়তে বসা, অথবা পরিবারের সদস্যদের সাথে সময় কাটান, এবং তারপর রাতে ঘুমিয়ে পড়েন।

এই রকম রুটিনমাফিক জীবন অনেকসময় একঘেয়ে লাগে। বৈচিত্রহীন ও আলুনি মনে হয়। কিন্তু এটাকেই স্বাভাবিক ভেবে এইভাবে দিনের পর দিন অতিবাহিত করতে করতে, একদিন মনে হবেই, যে আপনি কি সত্যিই সুখী! নাকি পুরোটাই প্রয়োজন, অপরের জন্য কাজ করে যাওয়া।

তাই এই একঘেয়েমি কাটানোর উপায় কিন্তু খোঁজা প্রয়োজন। একটু বৈচিত্র্য খুঁজে পেতে, নিম্নলিখিত উপায়গুলি অবলম্বন করতে পারেন।

একটি হবি বা শখ। ভালো করে চিন্তা করে দেখুন, আপনি অবসর সময়ে কী করতে ভালোবাসেন। বই পড়তে পারেন, টিভি দেখতে পারেন, বা রান্না করতে পারেন। খেয়াল রাখতে হবে, এই হবিটি যেন আপনার রোজকার জীবনের কাজের থেকে আলাদা হয়। মনে রাখবেন, অবসর খুব গুরুত্বপূর্ণ।

আপনার কোনো গুণের চর্চা করা। অনেক ক্ষেত্রে আমাদের মধ্যে নিহিত থাকে অনেক গুণ, যেগুলি চর্চার অভাবে অকালে মরে যায়। আপনি যদি ছবি আঁকতে বা নাচ করতে পছন্দ করেন, তাহলে অল্প সময়ে বার করে, প্রশিক্ষণ নিয়ে সেই গুণের অভ্যাস করতে পারেন।

যাতায়াতের পথে গান শোনা। গান শোনার বহু গুণ। মিউজিক থেরাপি অনুযায়ী, গানবাজনা আমাদের মনকে শান্ত করে, ও মনের ভার লাঘব করে মানসিক প্রশান্তি আনে। তাই বাসে বা ক্যাবে বসে থাকার সময়ে, হেডফোন বের করে ডুবে যান আপনার গানের জগতে। গন্তব্য স্থল আসার সময়ে কিন্তু মনে করে হেডফোন কান থেকে খুলে রাখবেন।

যোগাসন। এমন অনেক ধরণের আসন রয়েছে, যেগুলি মানসিক চাপ দূর করে, মনের আনন্দ ও সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে। সেইরকম যোগাসন করতে পারেন, যাতে দিনের ক্লান্তি দূর হয়।

প্রয়োজনীয় তৈল, অর্থাৎ এসেনশিয়াল অয়েল। আরোমা থেরাপির এমন অনেক ধরণের তৈল রয়েছে, যেগুলি পারফিউম হিসেবে ব্যবহার করলে, মনকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে। ডাক্তার বা যোগ্য ব্যক্তির পরামর্শ অনুযায়ী এই সুগন্ধিগুলি ব্যবহার করতে পারেন।

নিজের যত্ন। নিজের ত্বকের যত্ন নিলে, মন সবসময় উজ্জীবিত থাকে। তাই অল্প সময় পেলে, একটি ভালো ফেস প্যাক লাগিয়ে আরাম করতে পারেন। এখন তো সময় বাঁচানোর জন্য শীট মাস্ক বেরিয়েছে, যেগুলি মুখে পনের মিনিট লাগানোর পর তুলে ফেললেই মুখ সতেজ হয়ে যায়। সেইরকম মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন, মন ভালো থাকবে।

সবসময় ভালো থাকার চেষ্টা। আগের দিন বলেছিলাম না, যে সুখী হওয়া একটি অভ্যাস! সব সময় ভাবুন, আপনি কতটা ভালো আছেন। আপনার সাথে কী কী ভালো জিনিস ঘটেছে। এবং মনে মনে নিজের ব্যাপারে আনন্দিত ও গর্বিত বোধ করুন। হাতের দশটা আঙুল যেমন আলাদা, অথচ প্রত্যেকটি গুরুত্বপূর্ণ। ঠিক তেমন, আমরা প্রত্যেকে একে অপরের থেকে আলাদা, কেউ ভালো-খারাপ নই। সবাই ইউনিক, এবং বিশেষ। তাই একে অপরের সাথে তুলনা না করে, নিজের নিজস্বতাকে তুলে ধরার চেষ্টা করুন।

“সদা থাকো আনন্দে, সংসারে নির্ভয়ে নির্মলপ্রাণে ॥

জাগো প্রাতে আনন্দে, করো কর্ম আনন্দে সন্ধ্যায় গৃহে চলো হে আনন্দগানে ॥

সঙ্কটে সম্পদে থাকো কল্যাণে, থাকো আনন্দে নিন্দা-অপমানে। সবারে ক্ষমা করি থাকো আনন্দে, চির-অমৃতনির্ঝরে শান্তিরসপানে ॥”

ধন্যবাদ মাইকেল হালদার

You may also like...